সড়ক আইনের জরিমানা কমিয়ে ই-ট্রাফিক প্রসিকিউশন সফটওয়্যার হালনাগাদ

Samsuddin Chowdhury    |    ১১:৫১ এএম, ২০২০-০৬-২৯


সড়ক আইনের জরিমানা কমিয়ে ই-ট্রাফিক প্রসিকিউশন সফটওয়্যার হালনাগাদ

সামসুদ্দীন চৌধুরী: ১ নভেম্বর ২০১৯ হতে সরকার পরিবহনের ট্রাফিক নিয়ম কানুন ভঙ্গের অপরাধে জেল ও জরিমানার পরিমান কয়েকগুন বৃদ্ধি করে সড়ক পরিবহন আইন ২০১৮ কার্যকর করা হয়েছে। কিন্তু প্রথমে আইনটি নিয়ে মালিক শ্রমিক সংগঠনগুলোর চাপে সরকার পিছপা হয়ে যানবাহনের কাগজপত্র হালনাগাদ ও ড্রাইভিং লাইসেন্স নতুন ভাবে করা ও মেয়াদোত্তীর্ণ লাইসেন্স নবায়নের জন্য ৮ মাস সময় দিয়েছিল সরকার। সেই সময়টিও শেষ হচ্ছে ১ জুলাই ২০২০ তারিখে। তবে চালক ও মালিক নেতারা বলছে করোনার কারনে বিআরটিএর সকল কার্যক্রম বন্ধ রয়েছে প্রায় ৪ মাস ধরে। ফিটনেস ও পারমিট কিছুদিন আগে চালু করলেও এখনও ড্রাইভিং লাইসেন্স এর কার্যক্রম শুরু করেনি পরিবহনের এই নিয়ন্ত্রন সংস্থা। যার ফলে এখনও অনেক চালক ড্রাইভিং লাইসেন্স নবায়ন ও নতুন করে করার প্রক্রিয়া শেষ করতে পারেনি। এদিকে বিআরটিএ আবার চলতি বছরের ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত জরিমানা ছাড়ায় যানবাহনের সকল মেয়াদোত্তীর্ণ গাড়ীর কাগজপত্র হালনাগাদ করার সুযোগ দিয়েছে। 

চলতি বছরের ১৪ মে পুলিশ হেডকোয়ার্টার্স এর আদেশ অনুযায়ী আগামী ১ জুলাই থেকে সড়ক পরিবহন আইন ২০১৮ সম্পূর্ণ কার্যকর করার লক্ষে সারাদেশের ট্রাফিক পুলিশ যাতে একই পরিমান জরিমানা ধার্য্য করতে পারে সে জন্য E-traffic Prosecution & Fine system Softwareটি হালনাগাদ করার নির্দেশনা দিয়েছিল। software আপডেটের কাজ প্রায় শেষ। 

বিষয়টি প্যাসেঞ্জার ভয়েসকে নিশ্চিত করেছেন বাংলাদেশ পুলিশের এআইজি ট্রাফিক ম্যানেজমেন্ট একেএম মোশারফ হোসেন মিয়াজী। তিনি বলেন আমরা Software আপডেটের জন্য সারাদেশের ট্রাফিক বিভাগকে নির্দেশনা দিয়েছি। তবে মন্ত্রনালয়ের সিদ্ধান্ত পেলে পুলিশ সারাদেশে নতুন সড়ক পরিবহন আইন ২০১৮ কার্যকর করা শুরু করবে। এবং সারাদেশে ট্রাফিক পুলিশ যাতে একই পরিমান জরিমানা ধার্য্য করতে পারে সে জন্য E-traffic Prosecution & Fine system Software টিও হালনাগাদ করা হয়েছে।


পুুলিশ হেডকোয়ার্টার্স এর আদেশ অনুযায়ী E-traffic Prosecution & Fine system Software টিতে জরিমানার পরিমান কিছুটা শিতিল করা হয়েছে। ড্রাইভিং লাইসেন্স সংক্রান্ত প্রথমবার অপরাধের ক্ষেত্রে ৫ হাজার টাকা ও ২য় বার অপরাধের ক্ষেত্রে ১০ হাজার টাকা জরিমানা, রেজিষ্ট্রেশন সংক্রান্ত মামলায় প্রথমবার অপরাধের ক্ষেত্রে ১০ হাজার টাকা ও ২য় বার অপরাধের ক্ষেত্রে ২০ হাজার টাকা, ফিটনেস সংক্রান্ত মামলায় প্রথমবার অপরাধের ক্ষেত্রে ১০ হাজার টাকা ও ২য় বার অপরাধের ক্ষেত্রে ২০ হাজার টাকা, চলন্ত অবস্থায় যানবাহনের চালক মোবাইল ফোনে কথা বললে প্রথমবার অপরাধের ক্ষেত্রে ৩ হাজার টাকা ও ২য় বার অপরাধের ক্ষেত্রে ৬ হাজার টাকা, মোটর সাইকেলে ৩ জন বসা ও উভয়ের হেলমেট পরিধান না করা প্রথমবার অপরাধের ক্ষেত্রে ৩ হাজার টাকা ও ২য় বার অপরাধের ক্ষেত্রে ৬ হাজার টাকা জরিমানার আদেশ রেখে সফটওয়্যারটি হালনাগাদ করা হয়েছে ।

এই বিষয়ে বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন শ্রমিক লীগের সভাপতি মোহাম্মদ হানিফ খোকন বলেন, করোনার এই দূসময়ে পুলিশ যদি নতুন আইনে মামলা দেওয়া শুরু করে তাহলে চালকরা খুব বিপদে পরে যাবে। কারন সারাদেশের বিআরটিএতে মার্চ মাস থেকে এখনও লাইসেন্স এর কার্যক্রম বন্ধ রাখা হয়েছে। অনেক চালক এখনও ড্রাইভিং লাইসেন্স করতে পারেনি আবার অনেকে নবায়ন করতে পারেনি। নবায়ন কার্যক্রম বিআরটিএ চালু করলেও চালক শ্রমিকরা বর্তমানে তিন বেলা খাবার জোগাড় করতে পারছেনা। তারা কিভাবে লাইসেন্সের টাকা জোগাড় করবে। তাই সরকার আরও একটু সময় দেয়া দরকার।

জানতে চাইলে প্যাসেঞ্জার ভয়েসকে বিআরটিএর চেয়ারম্যান নুর মোহাম্মদ মজুমদার বলেন, সড়ক পরিবহন আইন ২০১৮ গত বছরের ১ লা নভেম্বর থেকে কার্যকর করা হয়েছে। সরকার আইনটির বিষয়ে কিছুটা নমনীয় ছিল। এখন সম্পূর্ণ কার্যকর করলে তেমন কোন সমস্যা হবে না। আর আমরা ৩১ মে থেকে যানবাহনের ফিটনেস ও পারমিট প্রদান শুরু করেছি। এখন ইতিমধ্যে লাইসেন্স এর লার্নার অনলাইনে করার ব্যবস্থা করেছি। স্বাস্থ্যবিধি মেনে লাইসেন্স নবায়নের সুযোগও দিয়েছি।